Amazon Products

পৃষ্ঠাসমূহ

Game Download

মঙ্গলবার, ১৮ অক্টোবর, ২০১১

Objection

স্কুল থেকে আসছে অনবরত অভিযোগ। বাচ্চা মারামারি করে, পাশে বসা সহপাঠীকে বিরক্ত করে। আর ক্লাসে একদম মনোযোগ নেই। সন্তানের এমন অবস্থা শুনে হতাশ হয়ে পড়েন অভিভাবক। সমস্যাটা কোথায় বুঝতে পারেন না। গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মোরশেদা বেগম মনে করেন, এসব ক্ষেত্রে শিশুটির মনোজগ বুঝতে হবে এবং সে অনুযায়ী তাকে বোঝাতে হবে। সব শিশু এক রকম হয় না। একেক জনের মনোজগৎ একেক রকম। এটা তাদের অভিভাবক এবং স্কুলের শিক্ষকদের বুঝতে হবে।
সন্তানের বিরুদ্ধে স্কুল থেকে অভিযোগ আসতে থাকলে সন্তানকে সরাসরি জিজ্ঞাসা করুন। কেন সে এ রকম করেছে, জানতে চান। এরপর তাকে ভালোভাবে বোঝাতে হবে। বন্ধুদের সঙ্গে এমন করতে হয় না। এমন করলে কেউ ভালোবাসবে না। গল্পচ্ছলে বলতে হবে কথাগুলো। সন্তানের যেকোনো বিষয়ে অভিভাবকের ভূমিকা সবচেয়ে জরুরি। অনেক সময় সন্তান বাসায় হয়তো কাজের লোককে মারছে কিংবা অন্য কোনো শিশু এলে তাকে মারছে। অভিভাবকেরা এসব তখন বেশি আমলে আনেন না। তাঁরা ভাবেন, ছোট মানুষ এমন তো করতেই পারে। এ ধারণা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। আপনার সন্তানকে তক্ষণা তার ভুল ধরিয়ে দিতে হবে। তার আচরণ অন্যকে কষ্ট দিচ্ছে, এ ধরনের মূল্যবোধ তৈরি করতে হবে।
মোরশেদা বেগম বলেন, সন্তানের সামনে মা-বাবার আচরণ অনেক নিয়ন্ত্রিত হতে হবে। তারা মাঝেমধ্যে সন্তানের সামনে অন্যের ওপর রাগারাগি করেন। কেউ কেউ দ্রুত রেগে যান। তাদের খেয়াল রাখতে হবে, এর প্রভাব সরাসরি শিশুটির ওপর পড়ছে। শিশুটি হয়তো ঘরে এর প্রকাশ ঘটাল না। কিন্তু স্কুলে গিয়ে অবশ্যই অন্যদের ওপর তা প্রয়োগ করবে। অভিভাবকের উচিত, এই শিশুদের পর্যাপ্ত সময় দেওয়া। তাকে কাছে নিয়ে বসিয়ে স্কুলের গল্প শোনা। সারা দিন সে কী কী করেছে সেসব জানা। তখন সে হয়তো নিজেই বলবে ওর দুষ্টুমির কথা। বকা না দিয়ে ধীরে ধীরে ওকে বুঝিয়ে বলবেন। এতে সমস্যা অনেকখানি কমে যাবে। শিশুটি যে বিষয়ে আগ্রহী, তাকে সে কাজে উৎসাহী করতে হবে। তাহলে ধীরে ধীরে সে নিজেকে অন্য কাজে ব্যস্ত রাখতে পারবে। দেখা যাবে স্কুলে গিয়েও সে একই কাজ করছে। স্কুলের শিক্ষকেরা শুধু বাসায় অভিযোগ না করে, কেন শিশুটি এমন করছে তা পর্যবেক্ষণ করুন। কোনো শিশু যদি তার মনের কথা খুলে বলতে না চায়, রাগ না করে তাকে ভালোভাবে বোঝাতে হবে। শিশুকে শাস্তি দেওয়া যাবে না। এতে হিতে বিপরীত হবে। শিশুর জেদ বেড়ে যেতে পারে, যার জন্য শাস্তি পেল তার প্রতি প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে উঠতে পারে।
আনন্দ নিকেতন ইউরোপিয়ান স্কুলের প্রাইমারি শাখার অধ্যক্ষ সামসে আরা হাসান বলেন, শিশুকে তার স্বকীয়তা প্রকাশ করতে দিতে হবে। তার মধ্যে নিজের মতো করে, দলের সঙ্গে— এমনকি পুরো ক্লাসের সঙ্গে কাজ করার মনোভাব গড়ে তুলতে হবে। তিন থেকে পাঁচ বছরের শিশুদের কেউ ক্লাসে বই পড়বে, কেউ ছবি আঁকবে, কেউ বা পাজল দিয়ে খেলবে, সে ব্যবস্থা স্কুল কর্তৃপক্ষকে করতে হবে। সুশৃঙ্খলভাবে শিশুকে এসব কাজে ব্যস্ত রাখা যেতে পারে। এ ছাড়া একটু অমনোযোগী শিশুকে শিক্ষকদের আরেকটু বেশি সময় দিতে হবে। তাহলে একসময় এসব সমস্যা সে কাটিয়ে উঠতে পারবে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন